আমি আর আমার বন্ধুরা ২ (রম্য)

 

[আমার এবং আমার বন্ধুদের বিভিন্ন মজার সব ঘটনা নিয়ে নতুন একটা সিরিজ লিখার পরিকল্পনা আমার অনেক দিন যাবৎ ছিলো।তাই সেই সব ঘটনার আলোকে লিখতে শুরু করলাম আমি আর আমার বন্ধুরা

নামক এই সিরিজ।এর সকল ঘটনা ৮৮% সত্য এবং গ্যারান্টেড।

যদি দূর্ভাগ্যবশত কারও ব্যাক্তিগত জীবনের সাথে মিল পাওয়া যায় অথবা মিলে যায় তাহলে দয়াকরে আমার প্রতি short code এ MC, BC ,SMC বা কামিনা,আবুইল্যা,বোকচোদ,মুড়ি খা ইত্যাদি word use করবেন না। ]

 

 

 

আমাদের সোসাইটিতে ইভ টিজিং নামক শব্দটা বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে ইভ টিজিং এর সঠিক সঙ্গা হলো,"অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদেরকে উদ্দেশ্য করে পথে ঘাটে, ষ্কুলের জানালা দিয়া,ছাদের কার্নিশে দাড়াইয়া,রিক্শায় চলার সময়,গলির চিপায় খারাইয়া,চাঁদনি চক অথবা নিউ মার্কেটের ভিড়ে,বাস অথবা ট্রেন ইত্যাদি স্থানে অশালীন মন্তব্য বা অমার্জনীয় ব্যাবহার করা।এই ইভ টিজিং এর পাপে পাপীষ্ঠ অনেকের শাস্তি হইতে দেখা গেসে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস,ভিকারুন নিসা (VNC),সেন্টাল ওইমেন্স ইত্যাদি নামকরা স্কুল ও কলেজ গুলোর সামনে।অবশ্য উক্ত স্কুল ও কলেজ গুলাকে আমরা সাধারনত রমনীদের ফ্যাক্টরী বলে থাকি।মিষ্টির দোকানে আসেপাশে যেমন মাছিরা ভিড় করে ঠিক তেমনি ওইসব রমনীদের ফ্যাক্টরীর সামনে রোমিওরা বিচরন করে।

 

 

যাইহোক,আমার লিখার বিষয়বস্তু কিন্ত এইটা ছিলো না।শুধু ছেলেরাই যে মেয়েদের টিজ করে এইটা বলা সম্পূর্নরূপে ভুল।যুগে যুগে মেয়েরাও পোলাগো টিজ করতো এবং করে।এর কিছু প্রমান আমার নিজের কঠিন বাস্তবতা থেকে এবং আমার বন্ধুদের জীবনি থেকে উল্লেখ করবো।

 

 

আজ থেকে বেশকিছু বছর আগের ঘটনা।তখন আমি কলেজে 2nd year এ পড়তাম।একদিন আমি কলেজের জন্য তৈরী হয়ে বাসা থেকে বের হয়েছি। পড়নে ফিটিং ফুলহাতা সাদা শার্ট যা কণুই পর্যন্ত মুড়ানো,কালো প্যান্ট,কালো জুতা আর চোখে -2.75 এর power adjusted কালো সান গ্লাস।সান গ্লাসটা অরডার দিয়ে বানিয়ে নিয়েছিলাম যাতে আমি মেয়েদের দিকে তাকালে যেন তারা বুঝতেই না পারে যে আমি তাকিয়েছি।যদিও সত্যিই আমার চোখে দূরদৃষ্টি বা মাইয়োপিয়া প্রোবলেম আছে।আমার বন্ধুদের কিছুতেই বুঝাইতে পারতাম না এই কথাটা.....তাদের একটাই কথা যে মাইয়াগো দিকে অন্য দৃষ্টিতে তাকাই বলে নাকি এই সমস্যা।

যাইহোক গাঁয়ে AXE এর body spray আর মাথায় gel মাইরা সামনের কিছু চুল দাড়া করাইয়া ভাবসে্র সাথে বাসা থেকে বাইর হইলাম।এমন ভাব মারার কারন আপনারা যা সন্দেহ করতেছেন ঠিক তাই ছিলো।কলেজে যাওয়ার আগে বিজয় ভাই এর কাছে ইংরেজি কোচিং করতাম।কলেজের মর্নিং শিফ্ট ছুটি হলে 1st year এর মেয়েদের একটা ব্যাচ পড়তে আসতো।সেই কারনেই ভাব নিয়া যাইতাম যদি ভাবে দুই একটা পাখি ঘায়েল হয়।

 

ঢাকার মেয়েদের যে এতটা উন্নটি হইছে সেইটা ওইদিনই আমি হারে হারে টের পাইছিলাম।আমি নিরহ প্রানীর মত ভাব মাইরা যাইতাছিলাম।সামনে দেখলাম দুইটা সুন্দরী মেয়ে আসতেছে।সাধারনত সুন্দরী মেয়ে দেখলে পোলাপান যেমন দেইখা না দেখার ভান করে আমিও তেমনি ভাব নিলাম যে ওদের তো আমি দেখিইনাই।অবশ্য দুই একবার ট্যারাচোখে সান গ্লাস এর ফাঁক দিয়া তাকাইছিলাম।মেয়ে দুইটা যখন আমার কাছাকাছি চলে এলো তখন আমার মাঝে অন্যরকম একটা উত্তেজনা কাজ করতে লাগলো যেটা সব ছেলেদের ক্ষেত্রেই হয়।

কিছুদিন আগে একটা রিসার্চ এ পড়লাম যে অতিসুন্দরী নারী একজন পুরুষের হার্টফেইল এর কারন হতে পারে। আমার এক বন্ধু রানা ওর হার্ট টা মেয়েদের প্রতি খুবই দূর্বল।যখন তখন যেখানে সেখানে সুন্দরী মেয়ে দেখলে প্রেমে পড়ে যায়। বিপদজনক হার্ট বলে ঘোষিত।যদি রিসার্চটা সত্যি হয় তহলে এই কারনে তার হার্টফেইল হইলে অবাক হবার কিছুই নাই।

যাইহোক,ইতিমধ্যে আমার ব্রেনের সবগুলা নিউরন লাফাইতে শুরু করলো।হার্টবিট বেড়ে গেলো।

 

মেয়ে দুইটা যখন আমার একদমই কছে চলে এলো তখন একটা মেয়ে আমার ঐ দিকে তাকিয়ে বললো,"চেইন খোলা",বলে পাশকাটিয়ে চলে গেলো। কথাটা শোনার পরমহুর্তেই আমার চোখ বড় হয়ে গেলো মনে হচ্চিলো আমার আসেপাশে ভূমিকম্প হচ্ছে । গাঁ দিয়ে দরদরিয়ে ঘাম ঝরতে শুরু করলো।তাহলে এতটা পথ কি আমি খোলা চেইন নিয়া আসছি?আলিবাবা চল্লিশ চোরের গল্পে কি তাহলে "চিচিং বন্ধ" বলতে ভুলে গিয়েছিলো আলিবাবা?

তারপর সবাই এইরকম পরিস্থিতিতে যা করে তাই করলাম।চারিদিকে তাকিয়ে একটা গলিতে ঢুকে পরলাম।যেই প্যান্টের চেইন ঠিক করবো দেখি এ কি? আমার চেইন তো লাগানোই ছিলো। মানে "চিচিং বন্ধ",লজ্জায় এবং রাগে গাঁ জ্বালা করতে লাগলো।পিছনে দৌরাইয়া গিয়া মাইয়া দুইটারে কইলাম,"আপনাদের ঘরে কি বাপ ভাই নাই নাকি?"

সেদিন থেকে আমি একটা জিনিস সবসময় মাথায় রাখতাম যে ঢাকার upgraded মাইয়াদের কাছ থেইকা দূরে থাকাই বুদ্ধিমানদের কাজ।

 

সেইদিন যদি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমার এই দুরাবস্থা দেখতেন তাহলে তার বিদ্রোহী সূরে নির্ঘাত একটা গান অথবা কবিতা রচনা কইরা ফেলতেন।যদিও তিনি নারীদের প্রতি একটু দূর্বল ছিলেন কিন্ত রানার মত হার্টফেইল করার পসিবিলিটি ছিলো না তার।